আসন্ন শীত মৌসুমে যাতে করোনা বাড়তে না পারে সে জন্য ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতি বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশে প্রবেশের জায়গাগুলোতে স্ক্রিনিং অব্যাহত রয়েছে। বিদেশফেরত ব্যক্তিদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন (সঙ্গনিরোধ) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তিন কোটি ভ্যাকসিন আমদানির লক্ষ্যে সরকারের সঙ্গে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মার ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ ছাড়া করোনার সংক্রমণ মোকাবিলায় চিকিৎসাসেবা, কমিউনিটি অংশগ্রহণ ও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা সংসদকে জানান প্রধানমন্ত্রী।
সরকারি দলের সাংসদ এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ জাপানের কাছ থেকে আপৎকালীন সহায়তা হিসেবে ২ হাজার ৭২০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা পাচ্ছে। কোভিড-১৯ প্রতিরোধের জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, করোনার টিকা ও চিকিৎসার সামগ্রী সংগ্রহের জন্য এডিবি আরও ৩০ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তা দিচ্ছে। করোনাকালীন কর্মসংস্থানের জন্য বিশ্বব্যাংক ১০৫ কোটি মার্কিন ডলার দিয়েছে। আবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে তৈরি পোশাক খাতের জন্য ১১০ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা পাওয়া গেছে। জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তৈরি পোশাক ও চামড়া শিল্পের জন্য ১১৩ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা হিসেবে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ ছাড়া এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের অনুমোদন দিয়েছে।
সরকারি দলের সাংসদ শফিকুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে কৃষির উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাত সত্ত্বেও প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনয়নের নীতি গ্রহণ করে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এ সময় বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনে চতুর্থ স্থান থেকে তৃতীয় স্থানে উন্নীত হয়েছে, ফলে খাদ্য নিরাপত্তার ভিত্তি সুদৃঢ় হয়েছে। এ ছাড়া সবজি উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, আম উৎপাদনে সপ্তম, আলু এবং পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম স্থানে থেকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে কৃষি উন্নয়নের রোল মডেল।
সরকারি দলের সাংসদ শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত মোট ৩ লাখ ১৯ হাজার ১৪২টি পরিবারের পুনর্বাসন করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যারাক নির্মাণের মাধ্যমে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৬৩টি পরিবারকে, জমি আছে ঘর নেই এমন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৭৯টি পরিবারকে এবং পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ৬০০টি পরিবারের গৃহ নির্মাণ করে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সব ধরনের নাশকতা ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে ও তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশসহ সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
Post a Comment